জিরোল-ঝাঁপ, সীমান্ত, বাংলার, গ্রামীণ, খেলা, Jirol-Jhap, Rural, sports, frontier, Bengal, Medinipur, Midnapore

জিরোল ঝাঁপ

সীমান্ত বাংলার গ্রামীণ খেলাধুলা - ১


Jirol Jhanp - Rural sports in frontier Bengal



চিন্ময় দাশ।



Home » Medinikatha Journal » Chinmoy Das » Jirol Jhanp


সাম্প্রতিক সময়কালে সাধারণভাবে খেলাধুলার দুটি ধরণ—আউটডোর গেমস এবং ইন্ডোর গেমস। বা, প্রাঙ্গণের খেলা এবং অঙ্গণের খেলা। গ্রামীণ খেলাকে সমাজবিজ্ঞানী এবং লোকসংস্কৃতিবিদ পণ্ডিতগণ ‘লোকক্রীড়া’ নামে অভিহিত করে থাকেন। তাঁরা খেলাগুলিকে ভাগ করেন খেলার চরিত্র বিচার করে। যেমন—আমোদ-প্রমোদ মূলক, দেহচর্চা মূলক, শিক্ষামূলক কিংবা বিশ্বাস-আচরণ মূলক ইত্যাদি। তবে, এ কথাটি জানা দরকার যে প্রত্যেকটি খেলা বয়সের মাপকাঠিতে তিন ভাগে বিভাজ্য—১ শিশুকিশোরদের খেলা, ২ যুবকযুবতীদের খেলা এবং বৃদ্ধবৃদ্ধাদের খেলা। তবে, বয়স নিরপেক্ষ বা সব বয়সেই খেলা হয়, এমন খেলাও আছে।


এদিকে, পাশ্চাত্যের পণ্ডিতগ্ণ গ্রামীন খেলাকে দু’ ভাগে বিভাজন করতে চান—১ গেমস অব স্কিল এবং ২ গেমস অব চান্স। ১ যে খেলাগুলিতে দৈহিক, মানসিক এবং নৈতিক গুণাবলির অনুশীলন হয়, সেগুলি স্কিল বা দক্ষতার খেলা। ২ যে খেলায় কৌশল থাকলেও, দৈব বা ভাগ্যের হাত বেশি (যেমন পাশা, লুডো বা তাস), সেগুলি চান্স বা ভাগ্যের খেলা।


জিরোল-ঝাঁপ, সীমান্ত, বাংলার, গ্রামীণ, খেলা, Jirol-Jhap, Rural, sports, frontier, Bengal, Medinipur, Midnapore
জিরোল ঝাঁপ - সীমান্ত বাংলার গ্রামীণ খেলাধুলা

এসকল পণ্ডিতি বিশ্লেষণ বা বিভাজনে গিয়ে আমাদের কাজ নাই। আমরা বরং মূল খেলার আলোচনায় ফিরে যাই।


আজকের আলোচ্য খেলাটির নাম-- জিরোল ঝাঁপ। কিন্তু ‘জিরোল’ শব্দটির উদ্ভব কিংবা অর্থ সন্ধান করা যায় না। কেউ কেউ বলেন, সম্ভবত বনাঞ্চল এলাকার কোন গাছের নাম ছিল জিরল। সেই গাছের ডাল থেকে খেলোয়াড়রা নিচে ঝাঁপ দিয়ে পড়তো। তা থেকেই হয়তো এই ‘জিরোল ঝাঁপ’ নামটি উদ্ভব হয়ে থাকতে পারে।


কিন্তু বিস্তৃতভাবে ক্ষেত্রসমীক্ষা কালে প্রশ্ন-উত্তর করে, জিরোল নামের তেমন কোনো গাছের পরিচয় জানা যায়নি। কিংবা এমন কোনও গাছের অস্তিত্ব আছে বলেও জানা সম্ভব হয়নি।



উদ্ভিদবিজ্ঞানীদের অভিমত, জিরোল-এর সাথে উচ্চারণগত সামঞ্জস্য আছে, তেমন একটি গাছের নাম—জারুল। সেই নাম থেকেই ‘জিরোল’ নাম বা শব্দের উৎপত্তি হয়ে থাকতে পারে। বাংলায় ‘বিশ্বকোষ’ (ENCYCLOPAEDIA INDICA) গ্রন্থে ‘জারুল’ শব্দটি অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, সেখানে এ সম্পর্কে বলা হয়েছে — “(দেশজ) বৃক্ষবিশেষ। (Lagerstocmia regina)“। সাধারণভাবে বনজ বৃক্ষ হলেও, সামাজিক বনসৃজন প্রকল্পে, জারুল বৃক্ষটি বসত অঞ্চলেও বহুল সংখ্যায় রোপিত হয়েছে এবং পরিচিতি লাভ করেছে। সেকারণে জানা যায়, এই বৃক্ষ ঝাঁকড়া হলেও, এই গাছের শাখাপ্রশাখা তেমন শক্ত নয়। বরং ভঙ্গুর (গ্রামীণ ভাষায়—বেশ মটকা) এবং পিচ্ছিল চরিত্রের। সেকারণে, খেলার সময় এই গাছকে বেছে নেওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। ফলে, জারুল’ থেকে ‘জিরোল’ শব্দের উদ্ভব হয়েছে, এমন মনে করার যুক্তি নাই।


এদিকে, ক্ষেত্রসমীক্ষার সময় দেখা গিয়েছে, ‘জঙ্গল মহল’-এর অন্তর্ভুক্ত মেদিনীপুর জেলার উত্তর-পশ্চিমের গড়বেতা, গোয়ালতোড়, কিংবা পার্শ্ববর্তী বাঁকুড়া জেলার সারেঙ্গ্‌ রাইপুর ইত্যাদি এলাকায়, এই জিরোল ঝাঁপ খেলাটির বহুল প্রচলন আছে। তবে, সেখানে খেলাটির নাম—ঝাড়োল ঝাঁপ। সেক্ষেত্রে খেলাটিতে ‘ঝাড়’ যুক্ত গাছই বেছে নেওয়া হয়, সেকারণেই ‘ঝাড়োল’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে—এমন অনুমান করা যেতে পারে। অর্থাৎ এক কথায় ঘন ডালপালা যুক্ত অনুচ্চ গাছ থেকে ঝাঁপ দেওয়ার খেলা—এ কারণেই খেলার নাম-- ‘জিরোল ঝাঁপ’।


অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার পশ্চিমাঞ্চলে, মুখ্যত জঙ্গল অধ্যুষিত এলাকাতেই, জিরোল ঝাঁপ খেলার বিশেষ প্রচলন আছে। এছাড়াও, জেলার দক্ষিণ অংশে সুবর্ণরেখা অববাহিকার কোন কোন এলাকাতেও জিরোল ঝাঁপ খেলার অস্তিত্ব দেখা যায়। কিন্তু জেলার পূর্বাংশে কোথাও এই খেলার প্রচলন দেখা যায় না।


গ্রামীন এই খেলাটি মুখ্যত কিশোর বয়সী বালকদের। সাধারণভাবে বালিকাদের এই খেলায় দেখা যায় না। এই খেলায় বয়সেরও কোন নির্ধারিত মাপকাঠি নাই। সাধারণত ৮-১০ থেকে ১৫-১৬ বছর বয়সী কিশোরদেরই এই খেলায় অংশ নিতে দেখা যায়।


এই খেলায় খেলোয়াড়দের সংখ্যারও কোন নির্দিষ্টতা নাই। পাঁচ-সাত থেকে শুরু করে, বেশি সংখ্যায়ও হতে পারে। তেমনই, খেলোয়াড়ের সংখ্যা যুগ্ম কিংবা বিযুগ্ম হতেই হবে, এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নাই। যেকোনও সংখ্যক খেলোয়াড় এই খেলায় অংশগ্রহণ এবং আয়োজন করতে পারে। তবে, অন্তত পাঁচ-ছ’ জন খেলোয়াড় না হলে, খেলা তেমন উপভোগ্য হয় না।


জিরোল-ঝাঁপ, সীমান্ত, বাংলার, গ্রামীণ, খেলা, Jirol-Jhap, Rural, sports, frontier, Bengal, Medinipur, Midnapore
জিরোল ঝাঁপ - সীমান্ত বাংলার গ্রামীণ খেলাধুলা

খেলার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ ঃ এই খেলায় ৩টি উপাদান প্রয়োজন—একটি প্রশস্ত প্রাঙ্গণ, অনুচ্চ একটি ঝাঁকড়া গাছ এবং একটি ছোট্মাপের লাঠি। ১. প্রাঙ্গণ অর্থাৎ খেলার স্থানটি অবশ্যই জনবসতি থেকে কিছুটা তফাতে, গাছপালায় ঘেরা জঙ্গল এলাকা হয়ে থাকে। খেলোয়াড়দের সাধারণত জঙ্গলমহল এলাকায় পাহাড়-ডুংরি, জোড়-নালা অধ্যুষিত একটি এলাকা বেছে নিতে দেখা যায়। ২. বেছে নেওয়া হয় শক্ত ডালপালা যুক্ত বড়সড় একটি ঝাঁকড়া গাছ। ৩. এছাড়া লাগবে দেড়-দু’হাত লম্বা একটি লাঠি। তবে, শক্তপোক্ত গাছের ডাল থেকে কেটে নেওয়া লাঠিই ব্যবহার করতে দেখা যায়।


কিশোর বয়সী বালকদের স্বভাবগত চঞ্চলতা, সাহসিকতা, উৎসাহ-- সমস্ত কিছুরই প্রকাশ দেখা যায় এই খেলায়। খেলাটির আয়োজন হয় একটি বড়সড় ঝাঁকড়া গাছের নিচে। এমন গাছ, যে গাছের কান্ড শক্ত, সহজে ভঙ্গুর নয়। গাছের তলায় খেলোয়াড়ের দল সমবেত হয়ে, প্রথমে একজন ‘চোর’ নির্বাচন করে। এলাকা ভিত্তিতে ‘চোর’ নামটিরও রকলফের আছে। কোথাও বলা হয় ‘হাঁড়ি’, ‘পের’, বা ‘খাঁদা’ ইত্যাদি।


এলাকাভেদে এই খেলায় চোর নির্বাচনের পদ্ধতিও ভিন্ন ভিন্ন। মুখ্যত অনুসরণ করা হয়, এমন ২টি রীতির উল্লেখ করছি আমরা।


১ খেলোয়াড়ের দল গোল হয়ে দাঁড়াবে। একজন ছেলে ছড়া কাটতে থাকবে—উবু… দশ… কুড়ি… তিরিশ থেকে একশ পর্যন্ত। প্রতিটি সংখ্যা উচ্চারণ করবে এবং সেই সাথে নিজেকে সহ এক একজন খেলোয়াড়কে ছুঁয়ে যাবে। যাকে ছুঁয়ে একশ হবে, তাকে ঠেলে সরিয়ে দেবে। পরের জন থেকে আবার শুরু হবে গোণা—উবু… দশ… কুড়ি। এইভাবে যে খেলোয়াড় থেকে যাবে, সে-ই চোর হিসাবে প্রথম খাটবে।


২ অন্য একটি রীতি হোল ‘হাতকপাটি’। সমবেত খেলোয়াড়দের ভিতর থেকে তিনজন খেলোয়াড় পরস্পরের হাত ধরে গোল হয়ে দাঁড়াবে। মুখে কোনও একটা শব্দ করতে করতে নিজের নিজের হাত দুলিয়ে এক হাতের তালুর উপর অন্য হাতের তালু রাখবে। প্রথম হাতের তালু হবে চিৎ অর্থাৎ উপর মুখী। অন্য হাতটি সে তার নিজের ইচ্ছে মতো, উপুড় কিংবা চিৎ-- যে কোনও ভাবে রাখতে পারে।


এবার দেখা যাবে, কোনও দুজনের হাত উপুড় কিংবা চিৎ হয়েছে। অন্য যে জনের হাত ভিন্ন রকম, সে বেরিয়ে যাবে। (তবে, যদি তিনজনেরই একই রকম হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে আবার সেটি অনুষ্ঠিত হবে।)



এইভাবে নতুন একজন এগিয়ে এসে যোগ দেবে তিনজনের দলে। একেবারে শেষে যখন দুজন থেকে যাবে, তখন বেরিয়ে যাওয়া একজন এসে যোগ দেয়। এবং দুজনের একজনকে পাশ করায়। একেবারে শেষে যে খেলোয়াড় থেকে যায়, সে চোর নির্ধারিত হয়।


খেলায় চোর নির্ধারণের এই পর্বটিও কম মজাদার নয়। এক একজন বেরিয়ে যায়, আর সমবেত উল্লাস শোনা যায়।


তবে, এই চোর নির্ধারণ পর্বটিতে সময় ব্যয় হয়ে যায়। সেকারণে, কখনও কখনও খেলোয়াড়দের কোনও একজন এগিয়ে এসে, নিজে চোর হতে রাজি হয়ে যায়। তাতে খেলা শুরু করবার বিলম্ব এড়ানো যায়।


এইবার নির্বাচিত চোর বাদে, অন্য ছেলেদের মধ্যে থেকে কোনও একজন ছেলে গাছের দিকে মুখ করে, দুটি পা ফাঁক করে দাঁড়াবে। এক হাতে লাঠিটি নিয়ে, পায়ের ফাঁক দিয়ে পিছন দিকে যতদূর সম্ভব লাঠি ছুঁড়ে দেবে। এইবার এই লাঠিটি কুড়িয়ে আনবার জন্য চোর দৌড় লাগাবে। সেই সময়ে বাকি খেলোয়াড়রা তাড়াহুড়ো করে, যে যত দ্রুত সম্ভব গাছটিতে চড়ে পড়বে। চোর যতক্ষণে লাঠি কুড়িয়ে নিয়ে ফিরে আসবে, সব খেলোয়াড় তখন গাছে চড়ে বসেছে।


চোর হাতের লাঠিটি দিয়ে গাছে চড়া খেলোয়াড়দের কাউকে ছুঁয়ে দিতে চেষ্টা করবে। উপরের ছেলেরা এই ডালে ওই ডালে লাফালাফি ঝাঁপাঝাঁপি করে, চোরের লাঠির নাগালের বাইরে সরে যেতে চেষ্টা করতে থাকে। চোর যদি কাউকে ছুঁয়ে দিতে পারে, তাহলে সেই খেলোয়াড় তখন চোর হয়ে যাবে। তখন সবাই গাছ থেকে নেমে এসে, আবার নতুন করে খেলা শুরু হবে।


কিন্তু চোর যখন লাঠি দিয়ে গাছের খেলোয়াড়দের কাউকে ছোঁয়ার চেষ্টা করতে থাকে, সেসময় গাছের কোনও খেলোয়াড় যাতে ঝাঁপ দিয়ে নেমে, দৌড়ে এসে গাছ ছুঁয়ে দিতে না পারে, সেদিকে সতর্ক লক্ষ্য রাখতে হয় চোরকে। কেন না, গাছ ছুঁয়ে দিতে পারলে, খেলার সেই ‘দান’ শেষ হয়ে যায়। চোর ছেলেটিকেই আবার চোর হয়ে খাটতে হয়।


জিরোল ঝাঁপ খেলার এই সময়টাই বেশ উত্তেজক। দক্ষতা এবং তৎপরতার চুড়ান্ত পর্যায়। গাছের খেলোয়াড়দের ছুঁয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে যেতে হয় চোরকে। তার পাশাপাশি, সতর্কভাবে নজর রাখতে হয়, কোনও একজন খেলোয়াড় যাতে ঝাঁপ দিয়ে নেমে, গাছ ছুঁয়ে না দেয়। অপর দিকে, গাছের ছেলেদেরও সাবধান থাকতে হয়, নেমে পড়বার পর চোর তাকে ছুঁয়ে দিতে পারলে, তাকেই পরের দানে চোর হতে হবে। এই পর্বেই খেলাটি বেশ জমে ওঠে। যতক্ষণ একজন খেলোয়াড় চোর খাটতে থাকবে, আনন্দ, হাসাহাসি, হইহুল্লোড় চলতে থাকবে।



জেলার দক্ষিণাঞ্চলেও, মুখ্যত সুবর্ণরেখা নদীর অববাহিকা অঞ্চলগুলিতে, এই খেলার প্রচলন আছে। তবে, সেখানে খেলাটির রীতি একটু ভিন্নতর। অন্যান্য এলাকার খেলার থেকে কিছু পার্থক্য দেখা যায়। সেখানেও একটি ঝাঁকড়া গাছ বেছে নেওয়া হয়। চোর নির্বাচনের পদ্ধতি প্রায় একই রকম। সেখানে লাঠিটিকে বলা হয়—‘থাবড়া’।


থাবড়া ছুঁড়ে দেওয়ার পর, অন্য ছেলেরা যখন গাছে চড়বার চেষ্টা করছে, সেসময় চোর দৌড়ে গিয়ে থাবড়াটি কুড়িয়ে এনে, গাছ থেকে খানিক দুরের একটি নির্দিষ্ট জায়গায় রেখে দেবে। তারপর খানিক দূরে গিয়ে দাঁড়াবে চোর। এইবার গাছে চড়া খেলোয়াড়েরা ঝুপঝাপ করে নিচে লাফিয়ে নামবে। তাদের চেষ্টা হবে, মাটিতে রাখা থাবড়াটিকে তুলে নিয়ে আসবার।


খেলোয়াড়ের দল থাবড়া তুলে আনবার জন্য যখন ছোটাছুটি করবে, সামান্য দূরে দাঁড়ানো চোর খেলোয়াড়টির কাজ হবে সেটিকে পাহারা দেওয়ার। সে চেষ্টা করবে থাবড়া যাতে কেউ তুলে নিতে না পারে। তুলে নিতে পারলে, খেলার সেই দান শেষ। চোরকেই পরের দানে আবার চোর খাটতে হবে।


অপর দিকে, চোর যদি থাবড়া তুলতে আসা কোনও খেলোয়াড়কে ছুঁয়ে দিতে পারে, তাহলে খেলার দান শেষ। ছুঁয়ে দেওয়া সেই খেলোয়াড় পরের দানের চোর হবে।


জঙ্গল মহলের অভাবী মানুষজনের জীবিকার জন্য বনজঙ্গলই প্রধান ভরসা। বন থেকে কাঠ-পাতা, ফল-পাকুড়, নানান জাতের আলু কিংবা ছাতু ইত্যাদি সংগ্রহ করবার জন্য, বনের ভেতরে ঢুকতেই হয়। সেসময় নেকড়ে, হায়না, ভালুক বা বুনোশুকর ইত্যাদি হিংস্র পশুর হাত থেকে আত্মরক্ষার জন্য, একমাত্র গাছই হল আশ্রয়স্থল। গাছে উঠে পড়তে পারলেই, বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।


জিরোল ঝাঁপ খেলা সহজে এবং চটপট গাছে চড়ে পড়বার কৌশল শেখায় সাহায্য করে কিশোর বয়সী বালকদের। শহিখিয়ে দেয়, কী করে হিংস্র পশুরূপী চোর-এর হাত থেকে গা বাঁচিয়ে, নিরাপদ থাকা যায়। এভাবে খেলাধুলার মধ্য দিয়েই পরবর্তীকালে জীবন সংগ্রামের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু রীতিনীতি, শৈশবকাল থেকেই তাদের রপ্ত হয়ে যায়। মুখ্যত একারণে, জঙ্গলমহল এলাকায় জিরোল ঝাঁপ খেলাটি বেশ জনপ্রিয় এবং বহুল প্রচলিতও।




M E D I N I K A T H A J O U R N A L

Edited by Arindam Bhowmik

(Published on 05.01.2025)




নিচে কমেন্ট বক্সে আপনার মূল্যবান মতামত জানান।