রাধানগর, রেশমি, রুমাল, Radhanagar, Silk, Handkerchief, Reshmi, Rumal, Medinipur, Midnapore

রাধানগরের রেশমি রুমাল

জাহাজ ভর্তি করে রেশমি রুমাল যেতো সম্রাট আওরঙ্গজেবের হারেমে



চিন্ময় দাশ।



Home » Medinikatha Journal » Chinmoy Das » Radhanagar's silk handkerchief


রাধানগরের ইতিহাস :


রাধানগর গ্রাম ঘাটাল মহকুমার অন্তর্গত। ১৮৫০ সালে এই মহকুমা গঠিত হয়। সদর ছিল গড়বেতা শহরে। নাম ছিল গড়বেতা মহকুমা। সেসময় চন্দ্রকোণা পরগণা ছিল হুগলি জেলার অধীন। পরবর্তীকালে চন্দ্রকোণাকে হুগলি থেকে বিচ্ছিন্ন করে, মেদিনীপুর জেলার সাথে যুক্ত করে দিলে, ঘাটাল শহর মহকুমার প্রধান হিসেবে গণ্য হয়। এবং মহকুমার নামও ঘাটাল মহকুমা নামে স্থায়ী হয়।


রাধানগর, রেশমি, রুমাল, Radhanagar, Silk, Handkerchief, Reshmi, Rumal, Medinipur, Midnapore
রাধানগরের মন্দির।

কিন্তু ইংরেজ আগমনের পূর্বকাল থেকেই এইসকল এলাকায় বয়নশিল্পের প্রচলন ছিল। পরে, বিশেষ করে রেশমশিল্পের প্রভূত বিকাশ ঘটেছিল। রাধানগর ছিল তার অন্যতম।


রাধানগর, রেশমি, রুমাল, Radhanagar, Silk, Handkerchief, Reshmi, Rumal, Medinipur, Midnapore
রাধানগরের মন্দির।

রাধানগরের রেশমশিল্প সম্পর্কে এল. এস. এস. ও’ম্যালি তাঁর ‘জেলা গেজেটিয়ার মেদিনীপুর’ গ্রন্থে বলেছেন—“"Cloth weaving appears to be the principal industry and important market for cotton and silk cloths."


এই এলাকার রেশমশিল্প এতদূর বিস্তৃত হয়েছিল যে ব্যবসার সম্প্রসারণ এবং পরিচালনার কাজের জন্য, ইউরোপীয় ব্যবসায়ীরা কুঠি গড়ে তুলেছিল। সেকারণেই বলা হয়, সতের শতকের মাঝামাঝি সময় থেকেই এই অঞ্চলের রেশম শিল্পের বিকাশ ঘটতে থাকে।



শিল্পের বিকাশের কারণে, রাধানগর এবং সংলগ্ন এলাকার জনবসতি দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছিল। রাধানগরেই ১৪ টি পাড়া গজিয়ে উঠেছিল। সেসময় পাড়াকে ‘পটি’ নামে উল্লেখ করা হতো। এই পটি শব্দের নাম চন্দ্রকোনা নগরীতেও পাওয়া যায়।


যাইহোক, রাধানগরের ১৪টি পটির নাম-- সেকেন্দারপুর, চন্দননগর, নূপুরবাজার, বেড়বাড়ি, কিসমত শ্যামনগর, শোভাগঞ্জ, নবগ্রাম, সিংহডাঙ্গা, বাঙালিটোলা, ব্রজমোহনপুর, শালিকা, খাস রাধানগর, শোভানগর ও বড়বাজার।


রাধানগর, রেশমি, রুমাল, Radhanagar, Silk, Handkerchief, Reshmi, Rumal, Medinipur, Midnapore
রাধানগরের মন্দির।

সতের শতকের শেষার্ধ থেকেই রাধানগরের রেশমশিল্প যে খ্যাতির শিখরে উঠতে পেরেছিল, তার স্বীকৃতি আছে অন্যান্য ইউরোপীয়দের বিবরণগুলিতেও। জনৈক Mr. C. R. Wilson তাঁর ‘Early Annals of the English in Bengal’ volume- I গ্রন্থে বলেছেন-- “Radhanagar was formerly an important market for cotton and silk cloths. Radhanagar silks are specially mentioned among the list of articles procurable in Lower Bengal during the second half of the seventeenth century."


কুঠিগুলির রেশম ব্যবসার কারবারের দিকে তাকালে দেখা যায়, ইংরেজ এবং ফরাসিদের কুঠিগুলিতে একজন করে রেসিডেন্ট থাকতেন। তিনি রেশমশিল্পের ব্যবসা দেখাশোনা করতেন। এই রেসিডেন্টরা স্থানীয় মহাজনদের রেশমি কাপড় ও সুতার কাপড় সরবরাহ করার জন্য, দাদন দিতেন। চুক্তি হতো যে, তারা কোম্পানি ছাড়া অন্য কারও কাছে ঐসকল উৎপাদিত দ্রব্য বিক্রি করতে পারবেন না। এবং নির্দিষ্ট দিনে কুঠিতে মাল পৌঁছে দিতে বাধ্য থাকবেন। জানা যায়, মহাজনেরাও চাষী এবং তাঁতিদের সাথে অনুরূপ চুক্তি করে, মাল সংগ্রহ করতেন।



রাধানগরের প্রাচীন সমৃদ্ধির সামান্য হলেও কিছু পাথুরে প্রমাণ এখনও টিকে আছে বাঙালিটোলা পটিতে। ১. সেকালে নীলচাষের প্রাদুর্ভাব ছিল এই এলাকায়। একটি নীল হাউস বা নীলকুঠির ধ্বংসাবশেষ বহুকাল রাধানগরে লক্ষ্য করা গিয়েছে। ২. অনেকগুলি দীঘি ছিল রাধানগরে। তার মধ্যে একটি ছিল দালাল পুকুর। এই দীঘির কাছ থেকে দুটি বড় লিপিফলক পাওয়া গিয়েছিল। সেগুলি আর্মেনিয়ান ভাষায় লেখা। পুরাবিদ অধ্যাপক প্রণব রায় একটির পাঠোদ্ধার করে বলেছেন, ফলকটি স্থাপিত হয়েছিল জনৈক আমীর খাঁর পুত্র রিয়াজুলের সমাধির উপর। রিয়াজুলের মৃত্যু হয়েছিল ১৬ই আগস্ট, ১৭১৬। ফলকটির হুবহু বয়ান-- “This is the tomb of Alabeli son of Amir Khaian. Died in 1716.”


বাঙালিটোলা পটিতেও একটি প্রাচীন কুঠির ধ্বংসাবশেষ আছে।


রাধানগর, রেশমি, রুমাল, Radhanagar, Silk, Handkerchief, Reshmi, Rumal, Medinipur, Midnapore
রাধানগরের মন্দির।

রাধানগর গ্রামের সীমানা ঘেঁষে রত্নাকর নামের একটি পুরানো নদী প্রবাহিত ছিল। সে নদী এখন একটি শীর্ণ খালে পরিণত হয়েছে। বলা হয়, বিদেশি বণিকের দল রূপনারায়ণ ও শীলাবতি হয়ে, সেদিনের রত্নাকর নদী পথে এই এলাকায় তাঁদের বাণিজ্যের কাজকর্ম সম্পন্ন করতেন।


বয়ন শিল্পের সমৃদ্ধির কালে, বহু সম্প্রদায়ের এবং জাতির মানুষ রাধানগরে এসে স্থায়ী অধিবাসী হয়েছিল। বয়নশিল্পের তাঁতি সম্প্রদায় ছিলেন তাদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ। এই গ্রামে এখনো দাস, প্রামানিক, দে, দত্ত, পন্ডিত এবং শীল পদবীধারী কয়েক ঘর তাঁতির বসবাস আছে। কয়েক বছর পূর্বকাল পর্যন্ত, তাদের অনেকেই ভালো কাপড় উৎপাদন করে গিয়েছেন।



এছাড়াও, এই গ্রামে তাম্বুলী, গন্ধবণিক, স্বর্ণবণিক, কর্মকার, রাঢ়ী ও মধ্যশ্রেণীর ব্রাহ্মণ, কায়স্থ, ময়রা, ছুতোর, বর্গক্ষেত্রীয়, দুলে, হাড়ী, ডোম, মুচি প্রভৃতি জাতির মানুষজন বসবাস করেন।


কিন্তু সপ্তদশ শতকের একেবারে গোড়া থেকে যে বয়ন শিল্পের উদ্ভব আর বিকাশ হয়েছিল, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন প্রতিষ্ঠার কিছুকাল পর, তার পতনের সূচনা হয়। বিদেশের কলে প্রস্তুত কাপড় আমদানি শুরু হয় উনবিংশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে এসে। তার ফলেই এই এলাকার বয়নশিল্প ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল।


রাধানগর, রেশমি, রুমাল, Radhanagar, Silk, Handkerchief, Reshmi, Rumal, Medinipur, Midnapore
রাধানগরের মন্দির।

এক সময় শিলাবতী নদীর তীরবর্তী শ্যামগঞ্জ, মহেশপুর, বাঁশখাল, কুঞ্জপুর, কলমিজোড়, মনোহরপুর, কাশীগঞ্জ, কালিকাপুর, চন্দ্রকোনা, মালবাঁধি, রাধানগর প্রভৃতি ঘাটাল মহকুমা জুড়ে যে সকল এলাকায় নীলকুঠি এবং রেশম কুঠীগুলি গড়ে উঠেছিল, ক্রমে ক্রমে তা একেবারেই বিলুপ্ত হয়ে যায়।


রাধানগর গ্রাম নামের জন্ম কথা :


সপ্তদশ শতাব্দীতে ‘বাংলার শিবাজী’ নামে পরিচিত শোভা সিংহ ছিলেন চেতুয়া বরদার রাজা। তাঁর ভাই ছিলেন হিম্মত সিংহ। শোনা যায়, এই দুই ভাই বিবাহ করেছিলেন চন্দ্রকোনা এবং বগড়ি রাজ পরিবারে। সে সময় চন্দ্রকোণা থেকে শোভা সিংহ যে যৌতুক পেয়েছিলেন, তার মধ্যে একটি গ্রাম ছিল। শোভা তাঁর পত্নী ‘রাধা’র নামে, রাজধানী বরদার নিকটবর্তী সেই গ্রামের নতুন নামকরণ করেছিলেন—‘রাধানগর’। বরদা থেকে সামান্য পশ্চিমে গ্রামটির অবস্থান।


রাধানগরের রুমাল :


সপ্তদশ শতক থেকেই রাধানগর এবং তার সংলগ্ন এলাকা তাঁত ও রেশম বস্ত্রের জন্য প্রসিদ্ধ ছিল। রেশম এবং তাঁতের উৎকৃষ্ট বস্ত্র উৎপাদন হতো এখানে। সেই খ্যাতির কারণে আর্মেণীয়, ওলন্দাজ, ইংরেজ এবং ফরাসি বণিকরা এখানে এসে ব্যবসায় যুক্ত হয়েছিল। ক্রমে ক্রমে এই এলাকা ফরাসি এবং ইংরেজ--এই দুই ইউরোপীয় বণিকদের প্রসিদ্ধ বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠতে পেরেছিল।


রাধানগর, রেশমি, রুমাল, Radhanagar, Silk, Handkerchief, Reshmi, Rumal, Medinipur, Midnapore
রাধানগরের মন্দির।

বিদেশী বণিকদের সুবাদে মধ্যপ্রাচ্য, দূরপ্রাচ্য এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশেও এখান থেকে বস্ত্র রপ্তানি করা হতো। তবে, বিভিন্ন গড়নের রেশম দ্রব্য উৎপাদন হলেও, রুমাল-এর খ্যাতি ছিল বিপুল। রাধানগরের বোনা রুমাল সরবরাহ করা হতো দিল্লি এবং আগ্রার মুঘল রাজ পরিবার গুলিতে।


জনৈক ক্যাপ্টেন আলেকজান্ডার হ্যামিলটন ১৮ শতকের একেবারে গোড়ার দিকে লিখেছেন-- "On the west side there is a river that runs by the back of Hooghly Island which leads up to Radhanagar famous for manufacturing cotton cloth and silk rumals or handkerchief."


রাধানগর, রেশমি, রুমাল, Radhanagar, Silk, Handkerchief, Reshmi, Rumal, Medinipur, Midnapore
রাধানগরের মন্দির।

বলা হয়, রাধানগর এলাকার উৎকৃষ্ট ‘রেশমি রুমাল’-এর খ্যাতি হয়েছিল বিশ্বজোড়া। এই রুমাল ভারত সম্রাট আওরঙ্গজেবের ভারী পছন্দের জিনিস ছিল। প্রতিবছর জাহাজ ভর্তি করে রাধানগর থেকে রুমাল যেত সম্রাটের হারেমের সুন্দরী রমণীদের জন্য। জানা যায়, দৈনিক ৫০০টি হিসাবে রুমাল নিতেন সম্রাট।


রাধানগরের মন্দির :


রেশমশিল্পের রমরমার আমলে যে মন্দিরগুলি রাধানগর গ্রামে গড়ে উঠেছিল, তার ভিতর একটি মাত্র মন্দির এখনো কোনরকমে টিকে আছে। সেটি ‘গোপীনাথ মন্দির’ নামে পরিচিত। সম্পূর্ণ পাথরে তৈরি দক্ষিণ মুখী মন্দিরটি পঞ্চরত্ন রীতিতে নির্মিত হয়েছে। কেউ কেউ বলেন ঘাটাল মহকুমায় পাথরে তৈরি একমাত্র মন্দির এটি ‌।


রাধানগর, রেশমি, রুমাল, Radhanagar, Silk, Handkerchief, Reshmi, Rumal, Medinipur, Midnapore
রাধানগরের মন্দির।

গোপীনাথের এই মন্দিরে একটি প্রতিষ্ঠা ফলক আছে। বর্তমানে সেটি ভয়ানক জীর্ণ। সেই ফলক অনুসারে জানা যায়, ১৬৪০ শকাব্দ বা ইংরেজি ১৭১৮ সালে এটি নির্মিত হয়েছিল।


মন্দিরটি জীর্ণ হয়ে পড়লে, বিগ্রহকে সরিয়ে নেওয়া হয়। চন্দ্রকোণা শহরের রামানুজ সম্প্রদায়ের অস্থলে গোপীনাথের বিগ্রহটি অধিষ্ঠিত আছেন।



মন্দিরের দক্ষিণ, পূর্ব এবং পশ্চিম তিনদিক জুড়েই ত্রিখিলান অলিন্দ আছে। পশ্চিমের অলিন্দে একটি গুপ্তকক্ষ নির্মিত আছে। অগ্নি এবং নৈঋত কোণেও দুটি কক্ষ সৃষ্টি হয়েছে।


দ্বিতলে উঠবার সিঁড়ি আছে এই মন্দিরে। বায়ুকোণ থেকে সিঁড়িটি রচিত। সাহস করে সেই সিঁড়ি ধরে উঠলে, ধাপগুলির মাথায় খিলান রচনার সৌন্দর্য যেকোনো দর্শককে মুগ্ধ করবে।


রাধানগর, রেশমি, রুমাল, Radhanagar, Silk, Handkerchief, Reshmi, Rumal, Medinipur, Midnapore
রাধানগরের মন্দির।

ইমারতী রীতির থাম এবং দরুণ রীতির খিলান দিয়ে গড়া হয়েছে মন্দিরটি। তবে পশ্চিমের খিলানগুলি হাইকোর্ট রীতিতে রচিত।


মাকড়া পাথরে নির্মিত হলেও, পাথর খোদাই করে কত উৎকৃষ্ট শিল্পকর্ম রচনা করা যেতে পারে, গোপীনাথের এই মন্দির তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। প্যানেলগুলির মধ্যে আছে শ্রীকৃষ্ণ এবং তাকে বেষ্টন করে গোপীমন্ডল। একটি প্যানেলে আছে গৌরাঙ্গ এবং নিত্যানন্দের সংকীর্তন দৃশ্য। প্যানেলগুলির রচনা হয়েছে বা-রিলিফ রীতিতে।



গোপীনাথের মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতার পরিচয় সঠিকভাবে জানা যায় না। মন্দিরের পশ্চিমে একটি মাটির উঁচু ঢিবি দেখা যায়। বিগত শতকের একেবারে গোড়ার দিকে, জনৈক গোবর্ধন দাস সেখানে বাস করতেন। তিনি জাতিতে তন্তুবায়। সম্ভবত তাঁরই কোন পূর্বপুরুষ নিজেদের কুলদেবতা গোপীনাথের জন্য মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন। গোবর্ধন দাস যতদিন জীবিত ছিলেন রেশমের ছোট কাপড় বুনে, গোপীনাথের জন্য পাঠিয়ে দিতেন।


আবার, কেউ কেউ অনুমান করেন, রাধানগরের জমিদার চৌধুরীবংশ গোপীনাথের মন্দিরটি নির্মাণ করে থাকতে পারেন। সঠিক ইতিহাস কালের গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। মিশ্রবেড় পটিতে মিশ্রবংশের শ্যামসুন্দর মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ, বাইশী শীতলা মন্দিরের পাদপীঠের প্রাচীন কারুকাজ-- সবই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এসবের সাথেই ধীরে ধীরে মুছে যাচ্ছে রাধানগরের অতীত সমৃদ্ধির সমূহ ইতিহাস।


গোপীনাথ এর এই মন্দির ছাড়া আরও কয়েকটি প্রাচীন মন্দির রাধানগর গ্রামে গড়ে উঠেছিল। দুটির উল্লেখ করা যেতে পারে—



১. ১৭৯৩ সালে ভারতের তৎকালীন বড়লাট ‘চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত’ প্রচলন করেছিলেন। সেসময় ২৯টি জমিদারির সাথে কোম্পানির চুক্তি হয়েছিল। সেই সময়ে জেলার ক্ষীরপাই, রাধানগর, রামজীবনপুর ইত্যাদি কয়েকটি পরগণায় পূর্বকালের আরও অনেকগুলি তালুকদার বংশ বাস করতেন। তাদের সঙ্গেও এই চুক্তি করা হয়েছিল।


রাধানগরের তেমনই একজন তালুকদার ছিলেন শালিকাপুরের চৌধুরী পরিবার। তাঁরা তাঁতিদের সুবিধার জন্য, নিজেদের জমিদারির ভিতরে একটা হাটের পত্তন করেছিলেন। সেই হাট প্রতিদিন সন্ধ্যায় বসতো। সারা দিনের কাজের শেষে, তাঁতিরা নিজেরাই হাটে চলে আসতে পারতেন। হাটটি ‘লাটের হাট’ নামে পরিচিত হয়ে উঠেছিল।


২. ‘বাইশে শীতলা’ নামে এক শীতলা মন্দির। সেই মন্দিরটির ভিত্তিবেদীতে কারুকার্য যুক্ত মাকড়া পাথরের কিছু অংশ এখনও এখানে ওখানে দেখা যায়। তা থেকে অনুমান করা হয়, সেখানে একটি প্রাচীন মন্দির ছিল।


রাধানগর, রেশমি, রুমাল, Radhanagar, Silk, Handkerchief, Reshmi, Rumal, Medinipur, Midnapore
রাধানগরের মন্দির।

এছাড়াও আরো দু’-একটি মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ দেখা যায়। কিন্তু সেগুলির পরিচয় উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।।


এইসব প্রাচীন মন্দির এবং তার ধ্বংসাবশেষগুলি থেকে অনুধাবন করতে অসুবিধা হয় না, রেশমশিল্পের রমরমার সময়ে এই এলাকার আর্থিক সমৃদ্ধি কতটা উন্নত হয়েছিল।




M E D I N I K A T H A J O U R N A L

Edited by Arindam Bhowmik

(Published on 24.08.2025)


আলাপচারিতা -

ডাক্তার শ্রী অরূপ চৌধুরী, রাধানগর।

যেতে চাইলে -

কলকাতার দিক থেকে পাঁশকুড়া বা মেছোগ্রাম হয়ে ঘাটাল, উত্তরের বর্ধমান বা আরামবাগ হয়ে ক্ষীরপাই, পশ্চিমে চন্দ্রকোনা রোড রেল স্টেশন হয়েও ক্ষীরপাই। ঘাটাল এবং ক্ষীরপাই এর মাঝে রাধানগর অবস্থিত। রাজপথের একেবারে গায়েই মন্দিরটির অবস্থান।


নিচে কমেন্ট বক্সে আপনার মূল্যবান মতামত জানান।